বড়ই চাষে তুলনামূলক কম খরচে অধিক লাভ
দূর্গাপুর প্রতিনিধিঃ
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কুল গাছে ফুল আসে। ফল ধরতে ধরতে নভেম্বর ডিসেম্বর। কাঁচা-পাকা উভয় অবস্থায় বড়ই খাওয়া যায়। তবে স্বাদে পার্থক্য থাকে। বাগান থেকে শুরু করে বাড়ির আঙিনার বড়ই গাছগুলো ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। ফুলের দরুন বহুগুণ বেড়ে গেছে বড়ই গাছের সৌন্দর্য। আর কিছুদিন পরই ধরবে বড়ই। পরাগায়ণ ও মধু সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে মৌমাছির ঝাঁক।
শিশুরাও করছে অপেক্ষা কবে ছুড়তে পারবে ঢিল। রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলা বরাবরই ফসলাদি উৎপাদনে দেশের ভেতরে ভালো অবস্থানে রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত প্রতিটি কৃষিপণ্য স্বাদ গন্ধে অনন্য। সেই জন্যই দেশব্যাপী রয়েছে বাড়তি চাহিদা। তাই বড়ই উৎপাদনেও পিছিয়ে নেই এই উপজেলা। উপজেলা জুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য বাগান আবার বাড়ির আঙিনায় শোভা পায় বড়ই গাছ। যেখানে দেশি বড়ই থেকে শুরু করে বাংলাদেশে নামকরা কুলের জাত বাউ কুল ১,২ বারী কুল ১, ২, ৩ ও স্থানীয় জাত সবজী, আপেল, নারিকেলী কুল ইত্যাদি শোভা পায়।
চাষী শাহিনুর রহমান জানান, চাষ করার পূর্ব থেকে বড়ই আমার অত্যন্ত পছন্দের ফল। সেই-জন্যই বাড়ির আঙিনায় দুটি বিদেশি জাতের উন্নত বড় চারা রোপণ করেছিলাম। সেই গাছে অনেক সুন্দর ফলন হয়েছিলো, যা আমার পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করেছিলাম। নতুনভাবে ১০ শতাংশ জায়গায় বিভিন্ন জাতের উন্নয়ন বড়ই বাগান তৈরী করেছি। যা থেকে খুবই সল্প পরিশ্রমে অধিক লাভ হচ্ছে ।
তিনি আরও জানান, গাছে পরিপক্ব কুল থাকা অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হলে রসে বড়ই ফেটে যায় ও ভেতরে পোকা হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এটাই সবথেকে বড় সমস্যা।
কৃষি অফিসার রাজিয়া সুলতানা জানান, কুল ফাটা রোধে বোরন সার ব্যবহার করতে হবে। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ফুল আসার আগে ও ফল ধরার পরে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। অধিক উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ফল সংগ্রহের পর গাছ ছেটে দিতে হবে। বাজারে বাউকুলের ব্যাপক বাজার চাহিদা রয়েছে তাই বাজার মূল্য ভালো।
বড়ই চাষে তুলনামূলক কম খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। পতিত জমি ফেলে না রেখে এমন জমিতে বড়ই গাছ রোপন করলে বাড়তি আয় করা সম্ভব। দূর্গাপুরে বড়ই চাষীদের জন্য সকল সময় আমাদের সহযোগিতা থাকবে।