বাঘায় চকরাজাপুর ইউনিয়নে পানিবন্ধী সাড়ে ৩ হাজার পরিবার
বাঘা প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫ টি চরের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার এখন পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। পদ্মার ১৫ টি চরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করে।
পানিতে তলিয়ে যাওয়া প্রায় তিন শতাধিক পরিবার চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উচ্চ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারীভাবে পানিবন্ধী মানুষকে ত্রাণ হিসেবে সহায়তা দেয়া হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দিয়াড় কাদিরপুর একটি চর। এই চরে ২৩ টি পরিবার বসবাস করে। দিয়াড় কাদিরপুর চরের প্রায় প্রতিটি পরিবারই অন্যের জমি বাৎসরিক ভাড়া নিয়ে বাড়ি করে বসবাস করে। তারা পানিবন্ধী হয়ে আছে। তাদের মতো আরো ১৪ টি চরের একই অবস্থা। তাদের বের হওয়ার কোন পথ নেই। তারা একটি বাড়ি থেকে আরেকটি বাড়ি যেতে পারে না। যদিও যায় টিন দিয়ে তৈরী করা হয়েছে ডিঙ্গি নৌকা। এভাবে তাদের চলছে জীবন। আশে পাশে বাজারও নেই। বাজার অনেক দুর, যেতে হলেও একইভাবে যায়। তাদের আয়ের উৎস কৃষি কাজ। বর্তমানে চারদিকে পানি। জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। তবে এর মধ্যে কেউ কেউ মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে।
দিয়াড় কাদিরপুর চরে সাবিরুল ইসলাম বলেন, আমি, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে অন্যের কাছে থেকে জমি ভাড়া নিয়ে দুটি ঘর তৈরী করে বসবাস করছি। তারপর পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ছালগ ও গরু নিয়ে বিপদে আছি। তার স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, এখন কৃষি কাজ নেই। কোন কোন সময়ে জাল দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে, যে টাকা হয় এই দিয়ে কোন রকম সংসার চলছে। তবে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কেউ কোন ত্রাণ হিসেবে সহযোগিতা করেনি।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার চরে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টি পরিবার রয়েছে। তারা এখন পানিবন্ধী রয়েছে। চরের অধিকাংশ বাড়ির পাশে পানি এসেছে। ৫০ ভাগ জমির ফসল পানির নিচে। ভাঙ্গনের কারণে চরের শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়েছে। তারা অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তারা গরু ছাগল নিয়ে মানবেতর জীনন যাপন করছে। এখন পর্যন্ত সরকারী বা বেসরকারীভাবে কেউ পানিবন্ধী মানুষকে ত্রাণ হিসেবে সহায়তা দেয়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বলেন, আমি জানি পদ্মার চরের মানুষ পানিবন্ধী হয়ে আছে। তাদের ত্রাণ হিসেবে সহাযোগিতার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সহযোগিতা পেলে তাৎক্ষনিকভাবে সহায়তা প্রদান করা হবে।